রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জেনো প্রেম চিরঋণী

         জেনো প্রেম চিরঋণী আপনারি হরষে,           জেনো, প্রিয়ে। সব পাপ ক্ষমা করি ঋণশোধ করে সে।      কলঙ্ক যাহা আছে,      দূর হয় তার কাছে, কালিমার ‘পরে তার অমৃত সে বরসে॥           

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

বোলো না বোলো না

          বোলো না, বোলো না, বোলো না,           আমি দয়াময়ী। মিথ্যা, মিথ্যা, মিথ্যা। বোলো না। এ কারাপ্রাচীরে শিলা আছে যত নহে তা কঠিন আমার মতো।           আমি দয়াময়ী!      মিথ্যা, মিথ্যা, মিথ্যা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

এ কী আনন্দ

         এ কী আনন্দ, আহা– হৃদয়ে দেহে ঘুচালে মম সকল বন্ধ। দুঃখ আমার আজি হল যে ধন্য, মৃত্যুগহনে লাগে অমৃতসুগন্ধ।           এলে কারাগারে           রজনীর পারে উষাসম মুক্তিরূপা অয়ি লক্ষ্ণী দয়াময়ী।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

হে বিদেশী এসো এসো

           হে বিদেশী এসো এসো। হে আমার প্রিয়, অভাগীর করুণা করিয়ো,এসো এসো। তোমা-সাথে এক স্রোতে ভাসিলাম আমি                     হে হৃদয়স্বামী                জীবনে মরণে প্রভু।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

বাজে গুরুগুরু শঙ্কার ডঙ্কা

           বাজে গুরু গুরু শঙ্কার ডঙ্কা,      ঝঞ্ঝা ঘনায় দূরে           ভীষণ নীরবে। কত রব সুখস্বপ্নের ঘোরে আপনা ভুলে,           সহসা জাগিতে হবে রে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

কোন অপরূপ স্বর্গের আলো

                    কোন্‌ অপরূপ স্বর্গের আলো দেখা দিল রে প্রলয়রাত্রি ভেদি       দুর্দিন দুর্যোগে, মরণমহিমা ভীষণের বাজালো বাঁশি।       অকরুণ নির্মম ভুবনে       দেখিনু এ কী সহসা– কোন্‌ আপনা-সমর্পণ, মুখে নির্ভয় হাসি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

থাম্‌ রে থাম্‌ রে তোরা

           থাম্‌ রে, থাম্‌ রে তোরা, ছেড়ে দে, ছেড়ে দে– দোষী ও-যে নয় নয়, মিথ্যা মিথ্যা সবই,       আমারি ছলনা ও যে–             বেঁধে নিয়ে যা মোরে                   রাজার চরণে।            চুপ করো, দূরে যাও, দূরে যাও নারী– বাধা দিয়ো না, বাধা দিয়ো না।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

বুক যে ফেটে যায়

         বুক যে ফেটে যায়, হায় হায় রে। তোর তরুণ জীবন দিলি নিষ্কারণে           মৃত্যুপিপাসিনীর পায় রে।                         ওরে সখা, মধুর দুর্লভ যৌবনধন ব্যর্থ করিলি                         কেন অকালে পুষ্পবিহীন গীতিহারা মরণমরুর পারে,                         ওরে সখা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯

প্রহরী ওগো প্রহরী

          প্রহরী, ওগো প্রহরী,       লহো লহো লহো মোরে বাঁধি। বিদেশী নহে সে তব শাসনপাত্র,       আমি একা অপরাধী।          তুমিই করেছ তবে চুরি?                   এই দেখো রাজ-অঙ্গুরী– রাজ-আভরণ দেহে করেছি ধারণ আজি,       সেই পরিতাপে আমি কাঁদি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৯